সামাজ সেবা ও রাজনীতিমিডিয়া কাভারেজ

রাজধানীতে নিরাপদ ও ব্যবহারযোগ্য পানির সংকট এবং সমাধানের পথ

নিরাপদ পানি পানের সুযোগ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। তাদের জন্য সুপেয়, নিরাপদ ও ব্যবহারযোগ্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু রাজধানী ঢাকা শহরে এই অধিকার এখন কাগজে-কলমে আছে কিন্তু বাস্তবে তার দেখা পাওয়া মুশকিল। মলের জীবাণু রয়েছে এমন উৎসের পানিও পান করছে রাজধানীর বহু মানুষ।

কারণগুলো হলো-
১. রাজধানীর অনেক এলাকার পানির লাইন ভালো না। কখনো কখনো পানির লাইন ও স্যুয়ারেজ একাকার হয়ে যায়। স্যুয়ারেজের ময়লা পানির লাইনে ঢুকে পড়াটা অনেকটা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। রাজধানীতে প্রতি পাঁচ জনে মাত্র একজন রীতিসম্মত স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা ব্যবস্থার আওতায় আছেন।

২. বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে পানির উৎস দূষিত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়- অনেক শৌচাগারের উপচে ময়লা ছড়িয়ে পানির উৎস দূষিত হয়ে পড়ে।

৩. জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অধিক সংখ্যায় মানুষ রাজধানীমুখী হওয়ার কারণে নিরাপদ পানির সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

৪. শিল্পবর্জ্য এবং পাতাল থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে পানির গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

৬. রাজধানী ঢাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানি অনেক এলাকার মানুষ নিয়মিত পায় না। এ ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনাই প্রধানত দায়ী।

৭. নিরাপদ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দের ঘাটতি থাকে। বাজেট যা বরাদ্দ দেয়া হয় তাও লুটপাট করা হয়, জনগণের কল্যাণে খরচ হয় কমই।

৮. পানি সমস্যার সমাধানে সঠিক লক্ষ্যমাত্রা ও করণীয় ঠিক করতে ব্যর্থতা রয়েছে।

৯. ঢাকা ওয়াসায় জনগণের অংশীদারিত্বের জন্য একটি বোর্ড রয়েছে। কিন্তু তেমন কার্যকর কোনো অংশীদারিত্ব নেই।

১০. পানি ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বা যেসব সংস্থা উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত, জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা কম।

সমাধান:
১. বিশুদ্ধ বা নিরাপদ পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হবে।

২. নিরাপদ পানির জন্য বাজেট বাড়াতে হবে। বাজেটের বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি অবশ্যই বন্ধ করা হবে।

৩. জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

৪. পানি ব্যবস্থাপনায় জন-অংশগ্রহণের সাথে সাথে জবাবদিহিতাও থাকতে হবে। পানি নিয়ে সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনাগুলোও জনগণের জানা জরুরি। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

৫. যারা সেবা দেন তাদের সাধারণত জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কম। এই দায় সেবা গ্রহীতাদের নয় বরং সেবাদাতার। যারা সেবা দেন, তাদের কার্যক্রম যাতে জনগণ জানতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করা হবে।

৬. দূষিত পানি শোধন করে ব্যবহারের পথ খুঁজতে হবে। অপচয় রোধ কীভাবে করা যায় ও গভীর নলকূপের পানির পুনঃব্যবহার কীভাবে করা যায়, সেটা খুঁজে বের করা হবে।

৭. শিল্পের ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করলে অনেক পানি সাশ্রয় হয়। শিল্প-কারখানায় অনেক জায়গা থাকে। সেখানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এ ব্যাপারে শিল্প-মালিকদের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

https://www.ishraque.com/wp-content/uploads/2020/11/ISHRAQUE-LOGO-1.png
+8801615-808093
Dhaka, Bangladesh

My lifelong goal is to serve the country and the people using all the skills I have acquired during higher education. Also My particularly interested in city planning, transportation systems and infrastructure development of Bangladesh.